• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কষ্টে আছেন সাজ তৈরির কারিগররা 


মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২, ০৯:২৭ এএম
কষ্টে আছেন সাজ তৈরির কারিগররা 

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাটারা গ্রামের সাজ (চিনি দিয়ে নানা আকারে তৈরি খাবার) তৈরির কারিগররা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের তৈরি সাজ দেশের বিভিন্ন জায়গার মেলায় শোভা পায়। তবে করোনাভাইরাসের কারণে মেলা না বসায় আগের মতো সাজ বিক্রি করতে পারছেন না তারা। এখন শুধু হাটবাজারে সাজ বিক্রি করে কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

সাজ তৈরির কারিগররা জানান, প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেশি মেলা বসে। এ সময় ভাটারা গ্রামের ১০ বণিক পরিবারের ব্যস্ততা চলে সাজ তৈরির। তারা চিনি দিয়ে হাতি, ঘোড়া, মুকুট, নৌকা, পাখি প্রভৃতি তৈরি করেন। তবে করোনার কারণে মেলা নেই। মেলা না থাকায় এখন তারা কদমাসহ নানা ধরনের খাদ্যসামগ্রী তৈরি করে তা স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি করে কোনোরকমে সংসার চালাচ্ছেন।

ভাটারা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রফুল্ল চন্দ্র বণিকের ছেলে দিলীপ চন্দ্র বণিক চিনি, পানি ও পরিমাণমতো তেঁতুলের পানি মিশিয়ে তা পাত্রে গরম করে পেস্ট বানিয়েছেন। পরে তা হাতের কারুকাজে কদমা তৈরি করছেন। তাকে সহায়তা করছেন স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। ৫০ কেজি চিনি দিয়ে ৫০ কেজি কদমা তৈরি হয়। ওই কদমা হাটবাজারে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেন বলে জানান দিলীপ।

দিলীপ চন্দ্র বণিক বলেন, “করোনার আগে মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের সাজের অনেক চাহিদা ছিল। প্রতিদিন গড়ে ১ মণ সাজ তৈরি করে বিক্রি করতাম। করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় ও গ্রামগঞ্জের মেলা-খেলা বন্ধ থাকায় সাজ তৈরির কাজও বন্ধ রয়েছে।”

শ্যামল বণিক নামের অপর কারিগর বলেন, “আমরা ভাটারা গ্রামের ১০ পরিবার সাজের পেশার সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে প্রতিবছর ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সাজের অর্ডার বেশি থাকত। বাকি মাসগুলো বসে বসে খেতে হয়। করোনার কারণে মেলা খেলা বন্ধ থাকায় কোনো অর্ডার নেই। মাঝেমধ্যে অর্ডার পেলে কাজ করি। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটছে আমাদের।”

একই গ্রামের কমল বণিক বলেন, “আমাদের কেউ কোনো সহযোগিতা করে না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের এ সাজ দেশের বাইরে রপ্তানি করা যেত। বাপ-দাদার পেশাকে ধরে রাখা সম্ভব হতো। এখন পরিবার নিয়ে অতি কষ্টে জীবনযাপন করছি।”

Link copied!